স্বদেশ ডেস্ক:
বাংলাদেশের শাসকদল আওয়ামী লীগের এক প্রতিনিধি দল আজ রোববার পা রাখতে চলেছে ভারতে। ভারত সরকার নয়, বরং শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আমন্ত্রণে এদেশে আসছে হাসিনার দলের পাঁচ সদস্য। বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন আসন্ন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির আমন্ত্রণে আওয়ামী লিগ নেতাদের ভারত সফর বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এমনটাই লিখেছে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
পত্রিকাটির অনলাইনে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক কিছু রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আমেরিকার সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঠিক করার জন্য দিল্লিকে মধ্যস্থতার আহ্বান জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এরই মাঝে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের ভারত সফরের বিষয়টি উপমহাদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে যখন আমেরিকা ‘অসন্তুষ্ট’, তখন ভারত সরকার এবং বিজেপি যে আওয়ামী লীগের ‘পাশে রয়েছে’, এই সফরে সেই বার্তাই যেন স্পষ্ট।
এর আগে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল বাংলাদেশে। সেদেশে আরো একটি সাধারণ নির্বাচন হতে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে কয়েকদিন আগেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্তনি ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অসম্মান করা ব্যক্তিদের মার্কিন ভিসা দেয়া হবে না।’
এদিকে গত নির্বাচনগুলোতে কারচুপির অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এসবের মাঝেই ভারতের সাথে সম্পর্ক আরো গভীর করার দিকে মন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিজেপির কাজের পদ্ধতি দেখানো হবে আওয়ামী লিগ প্রতিনিধি দলকে।
জানা গেছে, ভারত সফরে আসা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সভাপতিত্ব করবেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক। তাছাড়াও পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলে আরো থাকবেন দলের যুগ্ম মহাসচিব এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী এবং দুই নারী সংসদ সদস্য।
জানা গেছে, বিজেপি নেতাদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সাথে দেখা করার কথা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের। ‘বিজেপিকে চিনুন’ কর্মসূচির অধীনেই নাকি আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলকে ভারতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে। দলগতভাবে দুই দেশের শাসকগোষ্ঠীর সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করতেই এই সফর।
এদিকে, সেপ্টেম্বরে জি২০’র সম্মেলনে যোগ দিতে শেখ হাসিনার আসার কথা দিল্লিতে। তার আগে আওয়ামী লীগের এই প্রতিনিধি দল দিল্লি পৌঁছল।
সম্প্রতি বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছিলেন, ‘গোটা বিশ্ব এই নিয়ে নিজেদের মতামত জানাতে পারে। তবে ভারত এই নিয়ে কথা বলবে না। বাংলাদেশের সাথে চিরকাল আমাদের বিশেষ সম্পর্ক থেকেছে। বাংলাদেশে যেটাই হয় না কেন, তার প্রভাব আমাদের এখানেও পড়ে। আর ভারত মনে করে, বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে চায়, সেদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া যেন সেভাবেই অনুষ্ঠিত হয়। আমরা চাই যাতে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়। কোনো সহিংসতা যাতে না হয়। এছাড়া সেদেশের বিরোধী দল যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি তুলেছে, তা নিয়ে ভারতের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।’